bcs preparation

দৈনিক ১৫ ঘন্টা পড়াশুনা করে নিতে হবে বিসিএস প্রস্তুতি (BCS Preparation)


বিসিএস প্রস্তুতির(BCS Preparation) জন্য দৈনিক ১৫ ঘন্টা পড়াশুনা করতে হবে।

বিসিএস পরীক্ষা (BCS Exam) হলো বাংলাদেশর সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা এবং বিসিএস ক্যাডার(BCS Cadre) সবচেয়ে লোভনীয় চাকুরীগুলোর একটি। এই লোভনীয় চাকুরীর জন্য যদি দৈনিক ১৫ ঘন্টা সময় দেয়া না যায় তাহলে কিভাবে আপনি আমি এই চাকুরী পরীক্ষায় পাশ বা বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখি। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা বড়ই কঠিন। হাজার হাজার ক্যান্ডিডেট এই পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে তাদের স্বপন পূরণ করার জন্য। আসলে আপনার স্বপ্নটা কত বড় সেটিও একটা ব্যাপার, ছোট স্বপ্ন নিয়ে আপনি কখনোই সফল হতে পারবেন না। যাদের স্বপ্ন অনেক বড় আর অনেক পরিশ্রম করতে রাজি তারাই শুধু এই পরীক্ষায় পাশসহ বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্য।

বিসিএস প্রস্তুতির(BCS Preparation) জন্য নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে-

চিন্তার গভীরতাঃ স্বপ্ন, বাস্তবতা ও করণীয় নির্ধারণ করতে পারার মত চিন্তার গভীরতা থাকা অত্যন্ত জরুরী। সহজ চিন্তা দিয়ে নিজেকে ফাকি দেয়া যায় সহজেই, প্রকৃতপক্ষে আপনাকে ভাবতে হবে আমি বাংলাদেশের ৫ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীকে টেক্কা দিয়ে আমার সাফল্য কেড়ে নিয়ে আসবো। তার জন্য যথাযথ প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। আমি জানি দৈনিক ১৫ ঘন্টা পড়ার মত মন মানসিকতার ছাত্র-ছাত্রী খুব কমই আছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশঃ আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী বা বিসিএস প্রার্থীরা কেমন মানের পড়াশুনা করে বা কত ঘন্টা পড়াশুনা করে সেটা অবশ্যই বড় ব্যাপার। কারণ আপনার পড়াশুনার দৌড়ে সেগুলো ইনফ্লুয়েন্স হিসাবে কাজ করে। আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশুনার সিরিয়াসনেন্সও অনেক বড় বিষয়। “আমরা অনেক পড়াশুনা করি” হয়ত আর কেউ এত পড়া পড়ে না। অথবা “অনেক পড়ে ফেলেছি” এরকম ভাবার আগে অবশ্যই বুঝে বুঝে ১৫ ঘন্টা পড়ার কথাটা মাথায় রাখতে হবে।

আপনার বন্ধু সার্কলঃ এমন বন্ধু অসংখ্য থাকে যারা ২ ঘন্টা পড়তে ছয় বার টয়লেটে যায়্ আর আট বার মোবাইল চাপে বা ফোন করে আবার ভাবখান এমন দেখায় প্রচুর পড়েছি, পড়তে পড়তে জীবন শেষ। এরকম বন্ধুদের মধ্যে থেকে বিসিএস এর মত পরীক্ষায় পাশ করার আশা করা যায় না। শরীরের সক্ষমতার কথা মাথায় রেখে নিরবিচ্ছিন্ন পড়া চালিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে বিসিএস প্রস্তুতি(BCS Preparation )আমার রুমের বন্ধুদের সাথে নয় ববং বাংলাদেশের ৫ লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে।

নিজের বোধগম্যতাঃ প্রচুর বই পড়ে, বই খতম করলেই হবে না। নিজের বোঝার ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হবে। যদি মনে করেন আপনি প্রচুর পড়েন কিন্তু বোঝেন কম তাহলে শিক্ষক অথবা কোচিং সেন্টার এর সাহয্যে পড়া চালিয়ে যেতে পারেন। তবে নিজের উন্নতি খেয়াল রাখতে হবে। ১৫ ঘন্টার জায়গায় ১০ ঘন্টা পড়া হলেও কিছু একটা হতে পারে কিন্তু পড়া পড়ে বুঝতে না পারলে বা মাথায় ধরে রাখতে না পারলে আপনার বিসিএস নয় বিকল্প রাস্তা খোজা ভাল হবে।

ইংরেজিতে দক্ষতাঃ ইংরেজী বিষয়ের দক্ষতা ভাল থাকতে হবে, দক্ষতা কম হলে বাড়ানোর প্রাকটিস করতে হবে। তবে একবারে কাচা হলে চিন্তা করার বিষয় আছে। আপনি ইংরেজীতে কতটা সক্ষম তা আপনি ভাল জানেন তাই ১৫ ঘন্টার পড়ার প্রস্তুতিতে আপনার অনেক উন্নতি হবে। সবচেয়ে বেশি উন্নতি ইংরেজীতে হওয়া জরুরী কারণ ইংরেজী ছাড়া এসব বিসিএস পরীক্ষা পাশ বা চাকুরী পাওয়া সম্ভব নয়।

বিজ্ঞান বিষয়ে দক্ষতাঃ ইংরেজীর পাশাপাশি দক্ষতা লাগবে বিজ্ঞানের কিছু বিষয়ে। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করে থাকলে চালানো যাবে। তবে এসএসসি’তে মানবিক এ পড়াশুনা করে থাকলে অতীব কষ্ট হবে বিসিএস পরীক্ষার প্রিলি পাশ করতে। দৈনিক ১৫ ঘন্টার পড়াশুনায় এই বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে জোর দিতে হবে। এজন্যই ১৫ ঘন্টা পড়াশুনায় বরাদ্দ দিলে এসব পরীক্ষায় সকল দুর্বল বিষয়গুলো এগিয়ে নেওয়া যায়।

পারিপার্ক পরিবেশঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই পরীক্ষা এবং চাকুরীর জন্য ১৫ ঘন্টার পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অত্যন্ত সহায়ক পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থাকা জরুরী। পড়াশুনা চাপ বা ধরণ দেখে অনেকেই বিরুপ মন্তব্য করতে পারে। অনেকের কাছে পাগলামি মনে হতে পারে। পড়াশুনা ধরনটা আপনি আপনার স্বপ্নের সাথে মিলাতে পারেন। কিন্তু অন্য কেউ সেভাবে বিষয়টা মিলাতে পারবে না। তাই সহায়ক পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ছাড়া এ ধরনের প্রস্তুতি সম্ভব নয়।

শক্ত মনোবলঃ এই মনোবলই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সকল প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে বিসিএস পরীক্ষার এমন ভয়াভহ প্রস্তুতি নিতে গেলে অবশ্যই শক্ত মনোবল দরকার। সাফল্যের চূড়ায় পৌছানো সহজ কথা নয়, দশজনের ভাবনা আর আপনার ভাবনার পার্থক্য এখানেই। সাফল্যের শতভাগ চূড়ায় এক শতাংশ করে এগিয়ে যেতে চাইলে মনোবল মজমুত হতেই হবে।

পরিবারের সাপোর্টঃ পরিবারে ভূমিকা না থাকলে সহজ কাজও অনেক কঠিন হয়ে যায়। এই ধরনের প্রস্তুতি নিতে পরিবার আপনাকে যদি সহায়তা না করে তবে আপনার পড়ার প্রচুর বাধা সৃষ্টি হবে এবং আপনি লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে যাবেন। পরিবারকেও আপনার স্বপের অংশীদার করে তাদের সহযোগিতা নিতে হবে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, উৎসাহ, নিয়মিত খোজ-খবর রাখা আপনার মানসিক চাপ কমাতে এবং ভাল প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবে।

পড়ার পরিবেশঃ উপযুক্ত পরিবেশ অত্যন্ত প্রয়োজন এই ১৫ ঘন্টা বিসিএস প্রস্তুতি(BCS Preparation ) শুরুর জন্য । মনে রাখতে হবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন উন্নত পরিবেশ পড়াশুনার রুচি বাড়িয়ে দিবে। ফলে এ ধরনের প্রস্তুতি নিতে সহজ হবে। পড়াশুনার সবচেয়ে উত্তম জায়গা হল লাইব্রেরী অথবা রিডিং রুম। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী পড়ার পরিবেশ তৈরি করে নিতে হবে।

কখন কত ঘন্টা পড়বেনঃ

সকাল ৬ টা থেকে ৮ টা=১ ঘন্টা
সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১ টা=৪.৫ ঘন্টা
দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা=২.৫ ঘন্টা,
সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ৯ টা=১.৫ ঘন্টা,
রাত ১০ টা থেকে রাত ১১.৩০= ১.৫ ঘন্টা

“তবে ১৫ ঘন্টার প্রস্তুতিতে অবশ্যই ১১/১২ ঘন্টা পড়াশুনা কাভার করতে হবে”।

নিজ ধর্মে মনোযোগঃ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পড়াশুনার পাশাপাশি নিজ ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে উপরওয়ালার কাছে সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করতে হবে। সকল পরিশ্রম যথাযথভাবে করতে পারলে নিশ্চই উপরওয়ালা দয়া করবেন।